প্রদোষকন্যা’ বইটি ইংরেজি উপন্যাস Song of swamp land- এর রূপান্তর। ইংরেজি উপন্যাসটি লিখেছেন মঞ্জু ইসলাম। মঞ্জু ইসলামের জন্ম ১৯৫৩ সালে কিশোরগঞ্জ শহরে এবং বেড়ে ওঠা ময়মনসিংহ জেলাতে।
‘প্রদোষকন্যা’ বইটি ইংরেজি উপন্যাস Song of swamp land- এর রূপান্তর। ইংরেজি উপন্যাসটি লিখেছেন মঞ্জু ইসলাম। মঞ্জু ইসলামের জন্ম ১৯৫৩ সালে কিশোরগঞ্জ শহরে এবং বেড়ে ওঠা ময়মনসিংহ জেলাতে। ১৯৭৫ সালে তিনি একজন রাজনৈতিক শরণার্থী হিসাবে গ্রেট ব্রিটেনে আশ্রয় গ্রহণ করেন। বাকি জীবন তিনি সেখানেই বাস করছেন। ইউনিভার্সিটি অব গসেস্টারশায়ারে তিনি ইংরেজি সাহিত্যের রিডার হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি তিনটি ফিকশন বই লিখেছেন : ম্যাপমেকার্স অব স্পিটফিল্ডস, বারো, এবং সং অব আওয়ার সোয়াম্পল্যান্ড। দ্য এথিক্স অব ট্রাভেল : ফ্রম মার্কো পোলো টু কাফকা নামে তিনি একটি একাডেমিক বই রচনা করেছেন।
রাজিক হাসান
এক
আমার নাম কামাল। আমার জন্ম কোথায় ও কখন হয়েছিল জানি না আমি। কোনো এক প্রত্যুষে আলো ফোটার আগেই আমাদের ফুলতলী গ্রামের হাটের পাশে বটগাছতলায় কেউ আমাকে ফেলে যায়। একজন নবজাতকের কোনো স্মৃতি থাকে না, আমারও কোনো স্মৃতি নেই। হয়তো তখন আমি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলাম অথবা কাঁদছিলাম। নবজাতকের কান্নার শব্দ বেশি দূর শোনা যায় না। তাই ভোরের আলো না ফোটা পর্যন্ত কেউ আমার অস্তিত্ব টের পায় না। নবজাতকের কান্নার শব্দ কুকুর, বিড়াল বা শিয়ালের সদ্যজাত বাচ্চার কান্নার মতোই শোনায়। হয়তো তাই কেউ আমার কান্নার শব্দ শুনে বিভ্রান্তও হয়। সেদিন ছিল হাটবার। ভোরের আলো ফুটতে শুরু হলে গ্রামের লোকেরা তাদের নানা কাজ নিয়ে হাটে আসে, তখন তারা আমার অস্তিত্ব প্রথম টের পায়। শুনেছি তেনায় প্যাচানো নবজাতককে ঘিরে তখন কয়েকটি কুকুর ঘেউ ঘেউ করছিল। কুকুরদের হটিয়ে আমার কাছে আসে তারা। আমাকে প্রথম দেখে তাদের কেমন অনুভূতি হয়েছিল নিশ্চয় অনুমান করতে পারি।
অদ্ভুত এক চেহারার নবজাতককে দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়েছিল গ্রামের মানুষেরা। সেই নবজাতকের চেহারা কদাকার, মুখের ওপর বেশ বড় একটি গর্ত, ভুরু এবং ঠোঁট ছাড়া একটি মুখ। সামনের চোয়াল এবং জিভের সামান্য অংশও গেছে খোয়া। দেহের বাকি অংশ একদম ঠিক আছে। বেশির ভাগ মানুষ সেই মুখের দিকে তাকিয়েছে বিতৃষ্ণা নিয়ে, কেউ তাকিয়েছে ভীত চোখে, কেউ আবার করুণার চোখে।
আমার এই কুৎসিত মুখমণ্ডল সত্যিই যেকোনো মানুষের উপেক্ষা করা কঠিন। ধীরে ধীরে আমিও জীবন থেকে শিখে নিয়েছি, আমার জন্ম ও কদাকার এই চেহারা নিয়ে মাথা বেশি না ঘামাতে।
প্রদোষকন্যা’ বইটি ইংরেজি উপন্যাস Song of swamp land- এর রূপান্তর। ইংরেজি উপন্যাসটি লিখেছেন মঞ্জু ইসলাম। মঞ্জু ইসলামের জন্ম ১৯৫৩ সালে কিশোরগঞ্জ শহরে এবং বেড়ে ওঠা ময়মনসিংহ জেলাতে।
By রাজিক হাসান
Category: উপন্যাস
‘প্রদোষকন্যা’ বইটি ইংরেজি উপন্যাস Song of swamp land- এর রূপান্তর। ইংরেজি উপন্যাসটি লিখেছেন মঞ্জু ইসলাম। মঞ্জু ইসলামের জন্ম ১৯৫৩ সালে কিশোরগঞ্জ শহরে এবং বেড়ে ওঠা ময়মনসিংহ জেলাতে। ১৯৭৫ সালে তিনি একজন রাজনৈতিক শরণার্থী হিসাবে গ্রেট ব্রিটেনে আশ্রয় গ্রহণ করেন। বাকি জীবন তিনি সেখানেই বাস করছেন। ইউনিভার্সিটি অব গসেস্টারশায়ারে তিনি ইংরেজি সাহিত্যের রিডার হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেছেন। তিনি তিনটি ফিকশন বই লিখেছেন : ম্যাপমেকার্স অব স্পিটফিল্ডস, বারো, এবং সং অব আওয়ার সোয়াম্পল্যান্ড। দ্য এথিক্স অব ট্রাভেল : ফ্রম মার্কো পোলো টু কাফকা নামে তিনি একটি একাডেমিক বই রচনা করেছেন।
রাজিক হাসান
এক
আমার নাম কামাল। আমার জন্ম কোথায় ও কখন হয়েছিল জানি না আমি। কোনো এক প্রত্যুষে আলো ফোটার আগেই আমাদের ফুলতলী গ্রামের হাটের পাশে বটগাছতলায় কেউ আমাকে ফেলে যায়। একজন নবজাতকের কোনো স্মৃতি থাকে না, আমারও কোনো স্মৃতি নেই। হয়তো তখন আমি গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলাম অথবা কাঁদছিলাম। নবজাতকের কান্নার শব্দ বেশি দূর শোনা যায় না। তাই ভোরের আলো না ফোটা পর্যন্ত কেউ আমার অস্তিত্ব টের পায় না। নবজাতকের কান্নার শব্দ কুকুর, বিড়াল বা শিয়ালের সদ্যজাত বাচ্চার কান্নার মতোই শোনায়। হয়তো তাই কেউ আমার কান্নার শব্দ শুনে বিভ্রান্তও হয়। সেদিন ছিল হাটবার। ভোরের আলো ফুটতে শুরু হলে গ্রামের লোকেরা তাদের নানা কাজ নিয়ে হাটে আসে, তখন তারা আমার অস্তিত্ব প্রথম টের পায়। শুনেছি তেনায় প্যাচানো নবজাতককে ঘিরে তখন কয়েকটি কুকুর ঘেউ ঘেউ করছিল। কুকুরদের হটিয়ে আমার কাছে আসে তারা। আমাকে প্রথম দেখে তাদের কেমন অনুভূতি হয়েছিল নিশ্চয় অনুমান করতে পারি।
অদ্ভুত এক চেহারার নবজাতককে দেখে বিস্ময়ে হতবাক হয়েছিল গ্রামের মানুষেরা। সেই নবজাতকের চেহারা কদাকার, মুখের ওপর বেশ বড় একটি গর্ত, ভুরু এবং ঠোঁট ছাড়া একটি মুখ। সামনের চোয়াল এবং জিভের সামান্য অংশও গেছে খোয়া। দেহের বাকি অংশ একদম ঠিক আছে। বেশির ভাগ মানুষ সেই মুখের দিকে তাকিয়েছে বিতৃষ্ণা নিয়ে, কেউ তাকিয়েছে ভীত চোখে, কেউ আবার করুণার চোখে।
আমার এই কুৎসিত মুখমণ্ডল সত্যিই যেকোনো মানুষের উপেক্ষা করা কঠিন। ধীরে ধীরে আমিও জীবন থেকে শিখে নিয়েছি, আমার জন্ম ও কদাকার এই চেহারা নিয়ে মাথা বেশি না ঘামাতে।