আজকাল ইন্টারনেটের বিভিন্ন ফরমায়েশী ডায়েটে অভ্যস্ত হয়ে ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন। এতে তার মেটাবলিজম আরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়। অন্যদিকে লাইফস্টাইলের সাথে ফুডহ্যাবিটের সামঞ্জস্য না থাকায় ওজন বেড়ে যায়। ওজন বেড়ে স্থূল হয়ে যাওয়া অপরাধের কিছু নয়। স্থূলতা প্রতিরোধযোগ্য। নিজের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়েও কিছু নিয়মে অভ্যস্ত হয়ে ওজন কমানো সম্ভব। এ বইটিতে কীভাবে সহজ উপায়ে লাইফস্টাইল পরিবর্তন করে খাদ্যাভ্যাসের সাথে সামঞ্জস্য বিধান করে ওজন কমানো যায়, তা তুলে ধরা হয়েছে। আবার ওজন নিয়ন্ত্রণ করে কর্মময় সুস্থ জীবনযাপনেও কীভাবে দীর্ঘদিন সুস্থ থাকা যায় তার সহজ সমাধান পাওয়া যাবে।
About স্থূলতা নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণ মানসিক এবং শারীরিক
পৃথিবীতে দিন দিন স্থূলতা ভয়াবহ হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু বয়স থেকে বয়:বৃদ্ধ পর্যন্ত। শিশু কিশোরদের স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে না থাকার কারণে প্রাপ্তবয়সেও স্থূলতা স্থায়ী রূপ নিচ্ছে। অনেক সময় আমরা নিজ সন্তানের সঙ্গে অন্যের সন্তানের স্বাস্থ্য নিয়ে তুলনা করে থাকি। যেন মনে হয় অন্যের সন্তান নিজেরটার চেয়ে স্বাস্থ্যবান। স্বাস্থ্য বাড়ানোর জন্য অন্যের ন্যায় আমরা শিশুকে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ানোর প্রতিযোগিতায় নেমে যাই। যা শিশুর ছোট্ট পাকস্থলী আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। শিশু বয়সে তার যতটুকু খাওয়া প্রয়োজন, তার চেয়ে অনেক বেশি খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস তৈরি হয়। এক্ষেত্রে মা বাবা অনেক সময় খেয়াল করেন না। ছোট্ট বয়সে বেশি খাওয়ার কারণে শিশুর অবসাদগ্রস্থতা দেখা দিতে পারে। খেলাধূলায় যে পরিমাণ এনার্জি দরকার সেটা থাকে না। সারাক্ষণের সঙ্গী হিসেবে হালের মোবাইল, ট্যাব, ল্যাপটপ, কম্পিউটার তো আছেই। ধীরে ধীরে আমরা অলস হয়ে যাচ্ছি। দেহের ওজনও বাড়ছে। শহরে বসবাসরত একজন কর্মব্যস্ত গৃহিনী বা মায়েরা আজকাল অনেক ব্যস্ত। গেজেটে আসক্তি ও ঘরের বাইরে রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়ার কারণেও ঘরে রান্না কম হচ্ছে। অনেকেই মাংস বেশি পরিমাণে রান্না করে ফ্রিজিং করেন এবং প্রতিদিন সেখান থেকে খাচ্ছেন। রান্নার এমন পদ্ধতির জন্য শিশুদের মধ্যে শাক—সবজি কিংবা মাছ খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয় না। এতে শিশুকাল থেকে দেহের বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় কিছু পরিবর্তন হতে থাকে। বাড়ন্ত বয়সে যখন শিশুর পুষ্টি অনেক বেশি প্রয়োজন, তখন তার সামনে থেকে আমরা খাবার কেড়ে নেই। কিংবা মুটিয়ে যাওয়ার কারণে অন্যসব পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। কিশোর বয়সে স্লিম হওয়ার প্রতিযোগিতাও কাজ করে। দেহে সবচেয়ে বেশি পুষ্টির প্রয়োজন হয় এ বয়সে। একদিকে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব অন্যদিকে আজকাল ছেলেমেয়েদের মধ্যে কিশোরকাল বলতে যা বোঝায়, তা দেখা যাচ্ছে না। দেখা যায় সকালে ঘর থেকে বেরুচ্ছে স্কুল ড্রেস পরা অবস্থায়, আর ঘরে প্রবেশ করতে করতে রাত। স্কুল, কোচিংয়ের কারণে অনেককেই বাইরের খাবার খেতে হচ্ছে। এ অভ্যস্ততা আস্তে আস্তে স্থূলতার জন্ম দিচ্ছে। কিশোর—কিশোরীদের সঙ্গে মায়েদেরও একই অবস্থা। সারাদিনে ছেলেমেয়েদের খাদ্যাভ্যাস আর মায়েদের খাদ্যাভ্যাস একই। দীর্ঘ সময় মায়েদেরও একই পজিশনে বসে থাকার প্র্যাকটিস তৈরি হচ্ছে। শুধু তাই নয় রাস্তার জ্যামে বসে থাকা, ঘরে টেলিভিশনে সিরিয়াল কিংবা টক শো দেখার কারণে অতিরিক্ত ওজন বাড়ছে। কর্মক্ষেত্রেও একই অবস্থা। বর্তমানে আমরা কম্পিউটার নির্ভর কাজই বেশি করি। ডেস্ক জবে ২—৩ মাসের মধ্যেই কোমরের সাইজ বেড়ে যেতে থাকে। পুরুষেরা বাসায় আসার পথে হয়তো কিছুটা হাঁটাহাঁটি করেন। মায়েদের কর্মক্ষেত্রের পাশাপাশি সংসার সামাল দিতে হয়। যে কারণে পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের মধ্যে অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতার প্রকোপ বেশি। একজন স্থূল ব্যক্তি অনেকের মধ্যে যখন অবস্থান করেন, তখন তাকে অনেক কটুক্তির সম্মুখীন হতে হয়। স্থূল ব্যক্তিদের বিষন্নতার অন্যতম কারণ এই কটুক্তি। বিষন্নতার সঙ্গে অন্ত্রনালীর একটি যোগসূত্র আছে। স্থূল ব্যক্তিদের সেজন্য খাওয়ার আকাংখা অনেক বেশি হয়ে থাকে। অনেকেই আজকাল ইন্টারনেটের বিভিন্ন ফরমায়েশী ডায়েটে অভ্যস্ত হয়ে ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন। এতে তার মেটাবলিজম আরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়। অন্যদিকে লাইফস্টাইলের সাথে ফুডহ্যাবিটের সামঞ্জস্য না থাকায় ওজন বেড়ে যায়। ওজন বেড়ে স্থূল হয়ে যাওয়া অপরাধের কিছু নয়। স্থূলতা প্রতিরোধযোগ্য। নিজের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়েও কিছু নিয়মে অভ্যস্ত হয়ে ওজন কমানো সম্ভব। এ বইটিতে কীভাবে সহজ উপায়ে লাইফস্টাইল পরিবর্তন করে খাদ্যাভ্যাসের সাথে সামঞ্জস্য বিধান করে ওজন কমানো যায়, তা তুলে ধরা হয়েছে। আবার ওজন নিয়ন্ত্রণ করে কর্মময় সুস্থ জীবনযাপনেও কীভাবে দীর্ঘদিন সুস্থ থাকা যায় তার সহজ সমাধান পাওয়া যাবে।
সৈয়দা শারমিন আক্তার
প্রধান পুষ্টিবিদ, ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টার
আজকাল ইন্টারনেটের বিভিন্ন ফরমায়েশী ডায়েটে অভ্যস্ত হয়ে ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন। এতে তার মেটাবলিজম আরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়। অন্যদিকে লাইফস্টাইলের সাথে ফুডহ্যাবিটের সামঞ্জস্য না থাকায় ওজন বেড়ে যায়। ওজন বেড়ে স্থূল হয়ে যাওয়া অপরাধের কিছু নয়। স্থূলতা প্রতিরোধযোগ্য। নিজের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়েও কিছু নিয়মে অভ্যস্ত হয়ে ওজন কমানো সম্ভব। এ বইটিতে কীভাবে সহজ উপায়ে লাইফস্টাইল পরিবর্তন করে খাদ্যাভ্যাসের সাথে সামঞ্জস্য বিধান করে ওজন কমানো যায়, তা তুলে ধরা হয়েছে। আবার ওজন নিয়ন্ত্রণ করে কর্মময় সুস্থ জীবনযাপনেও কীভাবে দীর্ঘদিন সুস্থ থাকা যায় তার সহজ সমাধান পাওয়া যাবে।
By সৈয়দা শারমিন আক্তার
Category: স্বাস্থ্য বিষয়ক
পৃথিবীতে দিন দিন স্থূলতা ভয়াবহ হচ্ছে। বিশেষ করে শিশু বয়স থেকে বয়:বৃদ্ধ পর্যন্ত। শিশু কিশোরদের স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে না থাকার কারণে প্রাপ্তবয়সেও স্থূলতা স্থায়ী রূপ নিচ্ছে। অনেক সময় আমরা নিজ সন্তানের সঙ্গে অন্যের সন্তানের স্বাস্থ্য নিয়ে তুলনা করে থাকি। যেন মনে হয় অন্যের সন্তান নিজেরটার চেয়ে স্বাস্থ্যবান। স্বাস্থ্য বাড়ানোর জন্য অন্যের ন্যায় আমরা শিশুকে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ানোর প্রতিযোগিতায় নেমে যাই। যা শিশুর ছোট্ট পাকস্থলী আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে। শিশু বয়সে তার যতটুকু খাওয়া প্রয়োজন, তার চেয়ে অনেক বেশি খাদ্য গ্রহণের অভ্যাস তৈরি হয়। এক্ষেত্রে মা বাবা অনেক সময় খেয়াল করেন না। ছোট্ট বয়সে বেশি খাওয়ার কারণে শিশুর অবসাদগ্রস্থতা দেখা দিতে পারে। খেলাধূলায় যে পরিমাণ এনার্জি দরকার সেটা থাকে না। সারাক্ষণের সঙ্গী হিসেবে হালের মোবাইল, ট্যাব, ল্যাপটপ, কম্পিউটার তো আছেই। ধীরে ধীরে আমরা অলস হয়ে যাচ্ছি। দেহের ওজনও বাড়ছে। শহরে বসবাসরত একজন কর্মব্যস্ত গৃহিনী বা মায়েরা আজকাল অনেক ব্যস্ত। গেজেটে আসক্তি ও ঘরের বাইরে রেস্টুরেন্টে খাওয়া দাওয়ার কারণেও ঘরে রান্না কম হচ্ছে। অনেকেই মাংস বেশি পরিমাণে রান্না করে ফ্রিজিং করেন এবং প্রতিদিন সেখান থেকে খাচ্ছেন। রান্নার এমন পদ্ধতির জন্য শিশুদের মধ্যে শাক—সবজি কিংবা মাছ খাওয়ার অভ্যাস তৈরি হয় না। এতে শিশুকাল থেকে দেহের বিপাকীয় প্রক্রিয়ায় কিছু পরিবর্তন হতে থাকে। বাড়ন্ত বয়সে যখন শিশুর পুষ্টি অনেক বেশি প্রয়োজন, তখন তার সামনে থেকে আমরা খাবার কেড়ে নেই। কিংবা মুটিয়ে যাওয়ার কারণে অন্যসব পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। কিশোর বয়সে স্লিম হওয়ার প্রতিযোগিতাও কাজ করে। দেহে সবচেয়ে বেশি পুষ্টির প্রয়োজন হয় এ বয়সে। একদিকে পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাব অন্যদিকে আজকাল ছেলেমেয়েদের মধ্যে কিশোরকাল বলতে যা বোঝায়, তা দেখা যাচ্ছে না। দেখা যায় সকালে ঘর থেকে বেরুচ্ছে স্কুল ড্রেস পরা অবস্থায়, আর ঘরে প্রবেশ করতে করতে রাত। স্কুল, কোচিংয়ের কারণে অনেককেই বাইরের খাবার খেতে হচ্ছে। এ অভ্যস্ততা আস্তে আস্তে স্থূলতার জন্ম দিচ্ছে। কিশোর—কিশোরীদের সঙ্গে মায়েদেরও একই অবস্থা। সারাদিনে ছেলেমেয়েদের খাদ্যাভ্যাস আর মায়েদের খাদ্যাভ্যাস একই। দীর্ঘ সময় মায়েদেরও একই পজিশনে বসে থাকার প্র্যাকটিস তৈরি হচ্ছে। শুধু তাই নয় রাস্তার জ্যামে বসে থাকা, ঘরে টেলিভিশনে সিরিয়াল কিংবা টক শো দেখার কারণে অতিরিক্ত ওজন বাড়ছে। কর্মক্ষেত্রেও একই অবস্থা। বর্তমানে আমরা কম্পিউটার নির্ভর কাজই বেশি করি। ডেস্ক জবে ২—৩ মাসের মধ্যেই কোমরের সাইজ বেড়ে যেতে থাকে। পুরুষেরা বাসায় আসার পথে হয়তো কিছুটা হাঁটাহাঁটি করেন। মায়েদের কর্মক্ষেত্রের পাশাপাশি সংসার সামাল দিতে হয়। যে কারণে পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের মধ্যে অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতার প্রকোপ বেশি। একজন স্থূল ব্যক্তি অনেকের মধ্যে যখন অবস্থান করেন, তখন তাকে অনেক কটুক্তির সম্মুখীন হতে হয়। স্থূল ব্যক্তিদের বিষন্নতার অন্যতম কারণ এই কটুক্তি। বিষন্নতার সঙ্গে অন্ত্রনালীর একটি যোগসূত্র আছে। স্থূল ব্যক্তিদের সেজন্য খাওয়ার আকাংখা অনেক বেশি হয়ে থাকে। অনেকেই আজকাল ইন্টারনেটের বিভিন্ন ফরমায়েশী ডায়েটে অভ্যস্ত হয়ে ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন। এতে তার মেটাবলিজম আরও বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হয়। অন্যদিকে লাইফস্টাইলের সাথে ফুডহ্যাবিটের সামঞ্জস্য না থাকায় ওজন বেড়ে যায়। ওজন বেড়ে স্থূল হয়ে যাওয়া অপরাধের কিছু নয়। স্থূলতা প্রতিরোধযোগ্য। নিজের পছন্দকে প্রাধান্য দিয়েও কিছু নিয়মে অভ্যস্ত হয়ে ওজন কমানো সম্ভব। এ বইটিতে কীভাবে সহজ উপায়ে লাইফস্টাইল পরিবর্তন করে খাদ্যাভ্যাসের সাথে সামঞ্জস্য বিধান করে ওজন কমানো যায়, তা তুলে ধরা হয়েছে। আবার ওজন নিয়ন্ত্রণ করে কর্মময় সুস্থ জীবনযাপনেও কীভাবে দীর্ঘদিন সুস্থ থাকা যায় তার সহজ সমাধান পাওয়া যাবে।
সৈয়দা শারমিন আক্তার
প্রধান পুষ্টিবিদ, ডায়েট কাউন্সেলিং সেন্টার