গল্প, কবিতা, দিনলিপি, প্রেমপত্র, গান-যা-ই লিখি আমরা, শেষ পর্যন্ত সবই হয়ে যায় আত্মজীবনীর অংশ। সবাই তো লেখে- বাজারের ফর্দ, ফেইসবুকের স্ট্যাটাস, দিনের কার্যতালিকা বাৎসরিক পরিকল্পনা কতো কিছুই না জীবনভর লিখে যায় মানুষ। তবু সব লেখার কি সেই ধার বা ভার থাকে?- থাকে না।
গল্প, কবিতা, দিনলিপি, প্রেমপত্র, গান-যা-ই লিখি আমরা, শেষ পর্যন্ত সবই হয়ে যায় আত্মজীবনীর অংশ। সবাই তো লেখে- বাজারের ফর্দ, ফেইসবুকের স্ট্যাটাস, দিনের কার্যতালিকা বাৎসরিক পরিকল্পনা কতো কিছুই না জীবনভর লিখে যায় মানুষ। তবু সব লেখার কি সেই ধার বা ভার থাকে?- থাকে না।
কিন্তু আল্লাদিত্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন যা-ই লেখেন তা ভারেও কাটে, ধারেও কাটে। সবিনয়ে বলতে চাই আমার পঠন-পাঠনের সিলেবাসে তার বিস্মৃতের জার্নাল-এর মতো বই আর নেই। সাহিত্যের ফর্ম আর শ্রেণিকরণ ভেড়ে ফেলেন তিনি। আব্বাস কিয়ারোস্তামি যেমন ক্লোজআপ সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রের চেনা দেয়ালগুলো ভেঙে ফেলেন তেমনি আল্লাদিত্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন এই একটি বই দিয়ে সাহিত্যের চেনা দেয়ালগুলো ভেঙে ফেলেন মসৃন দক্ষতায়।
এই বইয়ের কোথাও তিনি ভীষণ ব্যক্তিগত, সরাসরি দিনলিপি ঠেসে দিয়েছেন কাগজের বুকে। আবার কোথাও শ্রীরামকৃষ্ণ পরম হংসদেবের মতো পরমামৃত বচন গেঁথে দেন অবলীলায়।
কবিতা পদবাচ্যে কোথাও তিনি একটি তিলের কাছে বারংবার নতজানু হন। আবার বেদনায় জারিত হন এই ভেবে আমারা থাকবো বা থাকবো না নিহারিকাপুঞ্জে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হতাশা বিপদ তাকে গ্রাস করে না। বরং পরমের দিকে এগোন তিনি। পরমের সাথে তার সম্পর্কটি বড় একান্ত। নিজের মতো করেই খোজেন পরম আ সত্তাকে।
ক্ষেত্রবিশেষে তাই আল্লাদিত্তা ভীষণ দার্শনিক। এক ঝলকে বলে যান অনেক কথা। কথা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও কথা রয়ে যায়। প্রেম-পুজা-প্রকৃতি এই সবই উঠে আসে তার বিস্মৃতের জার্নাল-এ। এ এক অদ্ভুত পান্থশালা এখানে ভালোবাসা, মায়া, দর্শন, প্রার্থনা, মোহ, পুণ্য সবই এসে জড়ো হয়। কখনো গোপনে, কখনো কোলাহল করে।
বিস্মৃতের জার্নাল এক অর্থে দৃশ্যগ্রাহ্য ভোজ । আল্লাদিত্তার বাণীর সঙ্গে যোগ হয়েছে আবিদ.এ.আজাদের চিত্রায়ন। এ নেহাত যোগ বা সংযোগ নয়, তারচেয়েও বড় কিছু। ফটোগ্রাফি এবংকিবিতার এমন মেলবন্ধন আগে দেখিনি আমরা। আমাদের অনুভব আর দর্শন অভিজ্ঞতায় নবতর মাত্রা যোগ করে দিয়েছেন আবিদ.এ.আজাদ। বলে রাখা ভালো, আলোকচিত্রি হিসাবে এককভাবে আজাদ নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করেন। আল্লাদিত্তার গদ্য-পদ্যের সাথে তার আলোকচিত্র নতুন সিনথেসিস নির্মাণে ব্যস্ত।
বিস্মৃতের জার্নাল বাংলা ভাষায় একটা নতুন সংযোজন। তা গ্রহণ করা বা না করা সময়ের হাতে। কিন্তু আমরা গর্বিত একে ক্রিয়েটিভ ঢাকার মলাটের আদরে আলিঙ্গন করে।
ছবিও লেখার কদর করতে গিয়ে এ বইয়ের আঙ্গিক মাধুর্য বাড়াতে হয়েছে তাল মিলিয়ে। এর বাধাই, আকার, আকৃতি, কাগজ-সবকিছুতেই আমরা চেষ্ট করেছি একটা নান্দনিকতা রক্ষা করতে। সেটা করতে গিয়ে এর মূল্যটা প্রচলিত বইয়ের চেয়ে একটু বেশি হয়ে গেল। কিন্তু ছবি আর লেখার বিবেচনায় সে মূল্য তবুও যৌক্তিক জায়গায় রাখার চেষ্টা হয়েছে। বিস্মৃতের জার্নাল ক্রিয়েটিভ ঢাকার একটা উচু দরের প্রকাশনা হয়ে থাকুক সে প্রত্যাশা রাখি।
গল্প, কবিতা, দিনলিপি, প্রেমপত্র, গান-যা-ই লিখি আমরা, শেষ পর্যন্ত সবই হয়ে যায় আত্মজীবনীর অংশ। সবাই তো লেখে- বাজারের ফর্দ, ফেইসবুকের স্ট্যাটাস, দিনের কার্যতালিকা বাৎসরিক পরিকল্পনা কতো কিছুই না জীবনভর লিখে যায় মানুষ। তবু সব লেখার কি সেই ধার বা ভার থাকে?- থাকে না।
By আল্লাদিত্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, আবিদ-এ-আজাদ
Category: আলোকচিত্র,জার্নাল
গল্প, কবিতা, দিনলিপি, প্রেমপত্র, গান-যা-ই লিখি আমরা, শেষ পর্যন্ত সবই হয়ে যায় আত্মজীবনীর অংশ। সবাই তো লেখে- বাজারের ফর্দ, ফেইসবুকের স্ট্যাটাস, দিনের কার্যতালিকা বাৎসরিক পরিকল্পনা কতো কিছুই না জীবনভর লিখে যায় মানুষ। তবু সব লেখার কি সেই ধার বা ভার থাকে?- থাকে না।
কিন্তু আল্লাদিত্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন যা-ই লেখেন তা ভারেও কাটে, ধারেও কাটে। সবিনয়ে বলতে চাই আমার পঠন-পাঠনের সিলেবাসে তার বিস্মৃতের জার্নাল-এর মতো বই আর নেই। সাহিত্যের ফর্ম আর শ্রেণিকরণ ভেড়ে ফেলেন তিনি। আব্বাস কিয়ারোস্তামি যেমন ক্লোজআপ সিনেমা দিয়ে চলচ্চিত্রের চেনা দেয়ালগুলো ভেঙে ফেলেন তেমনি আল্লাদিত্তা মোহাম্মদ আলাউদ্দিন এই একটি বই দিয়ে সাহিত্যের চেনা দেয়ালগুলো ভেঙে ফেলেন মসৃন দক্ষতায়।
এই বইয়ের কোথাও তিনি ভীষণ ব্যক্তিগত, সরাসরি দিনলিপি ঠেসে দিয়েছেন কাগজের বুকে। আবার কোথাও শ্রীরামকৃষ্ণ পরম হংসদেবের মতো পরমামৃত বচন গেঁথে দেন অবলীলায়।
কবিতা পদবাচ্যে কোথাও তিনি একটি তিলের কাছে বারংবার নতজানু হন। আবার বেদনায় জারিত হন এই ভেবে আমারা থাকবো বা থাকবো না নিহারিকাপুঞ্জে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত হতাশা বিপদ তাকে গ্রাস করে না। বরং পরমের দিকে এগোন তিনি। পরমের সাথে তার সম্পর্কটি বড় একান্ত। নিজের মতো করেই খোজেন পরম আ সত্তাকে।
ক্ষেত্রবিশেষে তাই আল্লাদিত্তা ভীষণ দার্শনিক। এক ঝলকে বলে যান অনেক কথা। কথা শেষ হয়ে যাওয়ার পরও কথা রয়ে যায়। প্রেম-পুজা-প্রকৃতি এই সবই উঠে আসে তার বিস্মৃতের জার্নাল-এ। এ এক অদ্ভুত পান্থশালা এখানে ভালোবাসা, মায়া, দর্শন, প্রার্থনা, মোহ, পুণ্য সবই এসে জড়ো হয়। কখনো গোপনে, কখনো কোলাহল করে।
বিস্মৃতের জার্নাল এক অর্থে দৃশ্যগ্রাহ্য ভোজ । আল্লাদিত্তার বাণীর সঙ্গে যোগ হয়েছে আবিদ.এ.আজাদের চিত্রায়ন। এ নেহাত যোগ বা সংযোগ নয়, তারচেয়েও বড় কিছু। ফটোগ্রাফি এবংকিবিতার এমন মেলবন্ধন আগে দেখিনি আমরা। আমাদের অনুভব আর দর্শন অভিজ্ঞতায় নবতর মাত্রা যোগ করে দিয়েছেন আবিদ.এ.আজাদ। বলে রাখা ভালো, আলোকচিত্রি হিসাবে এককভাবে আজাদ নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করেন। আল্লাদিত্তার গদ্য-পদ্যের সাথে তার আলোকচিত্র নতুন সিনথেসিস নির্মাণে ব্যস্ত।
বিস্মৃতের জার্নাল বাংলা ভাষায় একটা নতুন সংযোজন। তা গ্রহণ করা বা না করা সময়ের হাতে। কিন্তু আমরা গর্বিত একে ক্রিয়েটিভ ঢাকার মলাটের আদরে আলিঙ্গন করে।
ছবিও লেখার কদর করতে গিয়ে এ বইয়ের আঙ্গিক মাধুর্য বাড়াতে হয়েছে তাল মিলিয়ে। এর বাধাই, আকার, আকৃতি, কাগজ-সবকিছুতেই আমরা চেষ্ট করেছি একটা নান্দনিকতা রক্ষা করতে। সেটা করতে গিয়ে এর মূল্যটা প্রচলিত বইয়ের চেয়ে একটু বেশি হয়ে গেল। কিন্তু ছবি আর লেখার বিবেচনায় সে মূল্য তবুও যৌক্তিক জায়গায় রাখার চেষ্টা হয়েছে। বিস্মৃতের জার্নাল ক্রিয়েটিভ ঢাকার একটা উচু দরের প্রকাশনা হয়ে থাকুক সে প্রত্যাশা রাখি।